৫ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:১০ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করার সরকারি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ উঠেছে। এ বিষয়ে বৈধতা প্রশ্নে করা রিট ইতোমধ্যেই আদালতে দাখিল হয়েছে।
মঙ্গলবার ১৮ নভেম্বর সাধারণ বিনিয়োগকারী শহিদুল ইসলামের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন এই রিট আবেদন করেন। এতে বিবাদী হিসেবে রাখা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে।
গত ৯ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদ সংকটে থাকা পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। ব্যাংকগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে একত্র করে নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের কাজ চলছে। প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের জন্য দুটি নাম বিবেচনায় রয়েছে: ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ এবং ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’।
উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, নতুন ব্যাংক গঠন হলে এটি পাঁচ ব্যাংকের সব দায়দায়িত্ব ও সম্পত্তি নিয়ে কার্যক্রম শুরু করবে। অনুমোদিত মূলধন ধরা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা, আর পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি। এর মধ্যে সরকার দেবে ২০ হাজার কোটি টাকা। বেইল-ইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের শেয়ার প্রদান করে ১৫ হাজার কোটি টাকা মূলধন হিসেবে যোগ করা হবে, যা পরবর্তী সময়ে রেজল্যুশন পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের ফেরত দেওয়া হবে।
বেইল-ইন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে আমানতকারী ও পাওনাদারের ঋণের একটি অংশ বাতিল করে তা শেয়ারে রূপান্তর করা হয়।
এর আগে ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিকভাবে দুর্বল পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা করে তাদের পরিচালনায় প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়।
এ বিষয়ে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর বর্তমান আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পুঁজিঘাটতি ও অনিয়মের কারণে এগুলো টেকসইভাবে পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। তাই প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে এই ব্যাংকগুলো চালানো হবে। ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে না; গ্রাহকের অর্থ ও আমানত সুরক্ষিত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন ও কার্যক্রম পুনরুদ্ধারে কাজ করবেন। কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হবে না; তারা আগের মতোই বেতন-ভাতা পাবেন।’
গভর্নর আরও উল্লেখ করেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার স্বচ্ছতা আনতে বিশেষ অডিট শুরু করেছে। প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে একীভূতকরণ বা পুনর্গঠনের বিকল্প ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।’
এসময় তিনি বলেন, ‘এসআলমসহ যারা ব্যাংক খাত ধ্বংসে অপকর্ম করেছে তারা আর কখনও ফিরতে পারবে না।’