ভারতের ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ, নিহত ৬


ভারতের ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ, নিহত ৬

ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্য ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী এবং মাওবাদী বিদ্রোহীদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষে অন্তত ছয় বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। এই সংঘর্ষ ঘটে এমন সময়, যখন দীর্ঘদিনের সশস্ত্র আন্দোলন সাময়িক স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরই এটি ঘটল।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এএফপি জানিয়েছে, পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, বিজাপুরে যৌথ নিরাপত্তা অভিযান চলাকালীন উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকবন্দুকের লড়াই হয়। ছত্তিশগড়ের জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পাট্টিলিনগম টেলিফোনে এএফপিকে বলেন, “বিজাপুর জেলায় মাওবাদী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনার সময় ছয় মাওবাদী নিহত হয়।”

নিহতদের মধ্যে মাওবাদীদের “জ্যেষ্ঠ কমান্ডাররাও” রয়েছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। অভিযানে বিপুল পরিমাণ আধুনিক অস্ত্র ও বিস্ফোরকও উদ্ধার করা হয়েছে।

সংঘর্ষটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন কেন্দ্রীয় সরকার মাওবাদী বিদ্রোহ দমন করার জন্য সর্বাত্মক অভিযান শুরু করেছে এবং আগামী মার্চের মধ্যে বিদ্রোহ পুরোপুরি দমন করার অঙ্গীকার করেছে। দুই মাস আগে মাওবাদী বিদ্রোহীরা কয়েক দশক ধরে চলা সশস্ত্র সংগ্রাম স্থগিত করে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

গত মাসে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “যারা আত্মসমর্পণ করতে চান, তাদের স্বাগত জানানো হবে। আর যারা এখনো অস্ত্র ধরবেন, তারা আমাদের বাহিনীর কাছ থেকে কঠোর জবাব পাবেন।”

মাওবাদী বিদ্রোহের সূত্রপাত হয় ১৯৬৭ সালে, চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে। আদিবাসী অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষ নিয়ে লড়াই করার দাবি করেই এই বিদ্রোহ শুরু হয়। নকশাল নামে পরিচিত এই বিদ্রোহীরা সেই সময় জমিদারদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের বিদ্রোহের মাধ্যমে কার্যত শুরু হয়। আজ পর্যন্ত এই সংঘাতে ১২ হাজারেরও বেশি বিদ্রোহী, সেনা সদস্য ও সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন।

২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাওবাদীরা দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছিল এবং তখন তাদের যোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১৫ থেকে ২০ হাজার। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের ক্ষমতা অনেকটাই কমেছে।

গত অক্টোবর, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার জানায় যে দুই দিনের অভিযানে মাওবাদী জ্যেষ্ঠ নেতা মল্লোজুলা ভেনুগোপাল রাওসহ ২৫০-এর বেশি বিদ্রোহী আত্মসমর্পণ করেছেন।

সূত্র: এএফপি

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×