যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির জবাবে বৃহৎ সামরিক মহড়ার ঘোষণা ভেনেজুয়েলার


যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির জবাবে বৃহৎ সামরিক মহড়ার ঘোষণা ভেনেজুয়েলার

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ও সেনা মোতায়েন বাড়ায় পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ‘বৃহৎ সামরিক মহড়া’ শুরু করেছে ভেনেজুয়েলা। দেশটি জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের ‘সাম্রাজ্যবাদী হুমকির’ জবাব দিতেই এই সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ভেনেজুেলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনো লোপেজ জানান, স্থল, নৌ, বিমান ও রিজার্ভ বাহিনী এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে, যা চলবে বুধবার পর্যন্ত। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নির্দেশেই এই মহড়া শুরু হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পাদ্রিনো লোপেজ বলেন, মহড়ার উদ্দেশ্য হলো দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কমান্ড, কন্ট্রোল এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। নিয়মিত সেনাদের পাশাপাশি এতে অংশ নিচ্ছে বেসামরিক সদস্যদের নিয়ে গঠিত ‘বলিভারিয়ান মিলিশিয়া’, যা সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

এই মহড়ার ঘোষণা আসে এমন সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে তাদের সামরিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াচ্ছে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) মার্কিন নৌবাহিনী জানায়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ ‘ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড’ এখন যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ড এলাকায় অবস্থান করছে, যার আওতায় লাতিন আমেরিকার বৃহৎ অংশ অন্তর্ভুক্ত।

গত মাসে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ইউরোপ থেকে এই বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজটি ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে নয়টি আকাশযান স্কোয়াড্রন, দুটি গাইডেড মিসাইল ধ্বংসকারী জাহাজ ‘ইউএসএস বেইনব্রিজ’ ও ‘ইউএসএস মাহান’, একটি বিমান প্রতিরক্ষা নিয়ন্ত্রণ জাহাজ ‘ইউএসএস উইনস্টন এস চার্চিল’ এবং চার হাজারেরও বেশি মার্কিন নৌসদস্য।

ওয়াশিংটনের দাবি, এই মোতায়েন মাদক পাচার দমনের অংশ। তবে কারাকাসের মতে, যুক্তরাষ্ট্র আসলে এর আড়ালে ভেনেজুয়েলার সরকার পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সম্প্রতি দাবি করেছেন, তিনি সিআইএ-কে ভেনেজুয়েলায় অভিযান পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছিলেন, যদিও তার প্রশাসন জানিয়েছে, সরাসরি সামরিক হামলার কোনো পরিকল্পনা এখনো নেই।

ভেনেজুেলার এই সেনা কার্যক্রম ‘ইনডিপেনডেন্স প্ল্যান ২০০’-এর অংশ, যা প্রেসিডেন্ট মাদুরোর নির্দেশে পরিচালিত একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক প্রতিরক্ষা উদ্যোগ। দেশটির নিয়মিত সেনাবাহিনীতে প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার সদস্য রয়েছে। মাদুরোর দাবি, স্বেচ্ছাসেবী মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ইতোমধ্যে ৮০ লাখ ছাড়িয়েছে। তবে সামরিক বিশ্লেষকরা এই সংখ্যা ও বাহিনীর প্রশিক্ষণ সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

বর্তমানে ক্যারিবীয় অঞ্চলে আনুমানিক ১৫ হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। পাশাপাশি পুয়ের্তো রিকো দ্বীপে প্রায় ৫ হাজার মার্কিন সেনা এবং উন্নত যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও নজরদারি বিমান মোতায়েন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার উপকূলে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণমূলক উড্ডয়নও পরিচালনা করেছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×