জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত ও সরাসরি হস্তক্ষেপ


দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত ও সরাসরি হস্তক্ষেপ

জাতিসংঘের প্রস্তাবিত মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির মহাসচিব মাওলানা মনজুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন কোনো আন্তরিকতা নয়, এটি সরাসরি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে আঘাত।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে অন্তবর্তী সরকারের দায়িত্ব ছিলো জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের বিচারের মুখোমুখি করা। কিন্তু তার বদলে তারা পশ্চিমাদের সহযোগিতায় দেশের স্বাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তারা অভিযোগ করেন, ব্রিটিশরা ২০০ বছর দেশ শাসন করেও জাতিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, তাই এখন যদি যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনুসের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করতে চায়, তা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে।

নেতারা প্রশ্ন তোলেন, কেন প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, ভুটান বা মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস নেই, অথচ বাংলাদেশকে বেছে নেওয়া হচ্ছে? তাদের মতে, এ ধরনের অফিস স্থাপনের লক্ষ্যই হলো বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব দুর্বল করা।

বিশেষ অতিথি ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহারুদ্দিন জাকারিয়া বলেন, বাংলাদেশে এমন কী হয়েছে যে এখানে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বসাতে হবে? এ দেশের মুসলিম জনগণ এই ধরনের কার্যক্রমকে মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, গাজা, কাশ্মির বা মিয়ানমারে যখন মুসলিমদের ওপর নির্যাতন হয়, জাতিসংঘ তখন নির্বিকার। অথচ সেসব জায়গায় কোনো মানবাধিকার কার্যালয় নেই।

সরকারকে সমালোচনা করে বলেন, রক্ত উপর দিয়ে আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন, অথচ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বৈষম্য করছেন। আমরা আন্দোলনে জীবন দিয়েছি, গুলি খেয়েছি, কিন্তু আমাদের ডাকা হয়নি। এই বৈঠকের নাটক বন্ধ করুন।

তিনি নারী অধিকার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবিও জানান, অন্যথায় সংঘর্ষ অনিবার্য বলে হুঁশিয়ারি দেন।

দলটির মহাসচিব মনজুরুল ইসলাম আরও বলেন, মোদি বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে আমাদের এক ডজনের বেশি নেতা কারাবরণ করেছেন। দেশের অস্থায়ী সরকার কোনো রাজনৈতিক পরামর্শ ছাড়াই জাতিসংঘের কার্যালয়ের মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি ড. ইউনুস ও জাতিসংঘকে উদ্দেশ করে বলেন, গাজায় জাতিসংঘের কার্যালয় থেকেও ইসরায়েলের বর্বরতা ঠেকানো যায়নি। এই মানবাধিকার কমিশনের অতীত পক্ষপাতদুষ্ট। কলম্বিয়া, রাশিয়া, চীন, ভারতেও কার্যালয় নেই। তাহলে বাংলাদেশেই এমন দরদ কেন?

মনজুরুল ইসলাম বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকারের নামে সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার অধিকার ও ধর্মীয় অনুভূতির বিরুদ্ধে কথিত বাকস্বাধীনতা প্রচার করে। আমরা এগুলোকে মানবাধিকার হিসেবে মানি না।

সমাবেশে দলটির নেতারা জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×