ফেব্রুয়ারির নির্বাচনি ঘোষণা গণতন্ত্রের পথকে সুগম করবে: ফখরুল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০১:০২ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২৫
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা ঘোষণাকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “এই ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণা দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠবে এবং গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে।”
বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। বিএনপি বিশ্বাস করে, সব দল ও জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কার্যকর জাতীয় সংসদ গড়ে তোলা সম্ভব।
তিনি বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর এই দেশের মানুষ এক ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, শহীদ, আহত, গুম হয়েছেন, গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পরিকল্পিতভাবে এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে তিনটি নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে।”
তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় শাসন কায়েম করতে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অর্থনীতি, ব্যাংক খাত ও শেয়ারবাজার—সবখানে লুটপাট চালানো হয়েছে। ছাত্রলীগের মাধ্যমে সন্ত্রাস কায়েম করে শিক্ষাঙ্গনকে দখলে রাখা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব জানান, দলের প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও সাজা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। “দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মিথ্যা সাজানো মিথ্যা মামলায় ১০ বছর সাজা দিয়ে, ৬ বছর কারাগারে আটক করে রেখেছিল। ৫ আগস্ট তিনি মুক্তি পেয়েছেন,” বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেনি।” তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল এখনও সংগ্রামে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচনকালীন সময়ের ঘোষণা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বিএনপি এই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানায়। বিএনপি বিশ্বাস করে এই ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো যে অঙ্গীকার করেছে তা পালনের মধ্যদিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। সুযোগ সৃষ্টি হবে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে সত্যিকারের প্রগতিশীল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ প্রক্রিয়ার।”
উল্লেখ্য, গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে, গত ৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দেন যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকার চিঠি দেবে বলেও জানান তিনি। তার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো।