অন্তত ৮ উপদেষ্টার দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ দিতে পারব: সাবেক সচিব সাত্তার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১২:৪৪ পিএম, ০৯ আগস্ট ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ নিজের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ বা বদলি হয় না।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও আগামী দিনের জনপ্রশাসন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। অবসরপ্রাপ্ত এ সচিব ৮২ ব্যাচের বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং বর্তমানে অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি।
আব্দুস সাত্তার অভিযোগ করেন, “একজন উপদেষ্টার এপিএসের অ্যাকাউন্টে ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নূরজাহান বেগমের মতো একজনের হাতে থাকা উচিত কি না, এবং স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় অনভিজ্ঞ উপদেষ্টার নিয়ন্ত্রণে থাকা কতটা যুক্তিসঙ্গত।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছরে দুর্নীতি কমার বদলে বেড়েছে। “এক সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্কুলের জমির নামজারিতে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছে, আর ঢাকার আশপাশের একজন ইউএনও কারখানার লে আউট পাস করতে ২০ লাখ টাকা দাবি করেছেন।”
সাত্তার জানান, “আমি একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে থাকি। গত ৫ আগস্টের পর সেখানে হাজার হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারী এসেছেন। আমার বস তারেক রহমান আমাকে ডেকে বললেন, ‘কী হচ্ছে? এরা কারা? তারা কেন আসে?’ আমি বলেছি, এরা সবাই বঞ্চিত যারা গত ১৫ বছর বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। তবে বস আমাকে অফিসে ইন-সার্ভিস কর্মকর্তাদের প্রবেশ বন্ধ করতে বলেছেন।”
তিনি বলেন, “আমলাদের চরিত্র খারাপ হয়ে গেছে, কিন্তু জুলাই আন্দোলনের রক্তের ওপর বসা অন্তত আটজন উপদেষ্টার দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ দিতে পারি। গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তাদের দুর্নীতির প্রমাণ আছে, কিন্তু কেউ দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
সেমিনারে গত সরকারের ১৫ বছরের বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয় উঠে আসে। অংশগ্রহণকারীরা প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার হওয়ার বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং ভবিষ্যতে প্রশাসনের এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ছিলেন মুখ্য আলোচক। অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমান, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কানিজ মওলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাফিউল ইসলাম।
সেমিনারে শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য দেন। সরকারি কর্মকমিশনের সচিব সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নজরুল ইসলাম।