এনসিপি থেকে আরও ৪ নেতার পদত্যাগ

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটি থেকে চারজন নেতা একসঙ্গে পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে শিবচর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন।

পদত্যাগকারীরা হলেন—শিবচর উপজেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী শাকিল খান এবং সমন্বয় কমিটির সদস্য মো. রিয়াজ রহমান, মহিউদ্দিন ও কাজী রফিক। সংবাদ সম্মেলনে দলের হয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. রিয়াজ রহমান।

তিনি বলেন, "কিন্তু দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করছি যে, শিবচর থানায় দল পরিচালনার দায়িত্ব কিছু অযোগ্য ও বিতর্কিত ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। যারা আদর্শিক, নৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে সম্পূর্ণ অযোগ্য। এর ফলে দলের প্রকৃত, নিষ্ঠাবান ও ত্যাগী কর্মীরা যথাযথ মর্যাদা ও মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ ধরনের নেতৃত্বের মাধ্যমে শিবচরের ইতিবাচক পরিবর্তন বা টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।"

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময় আত্মবিশ্লেষণ ও বিবেচনার পর তারা পুরোপুরি স্বেচ্ছায় দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। "বর্তমানে আমরা বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। আমাদের দ্বারা যদি কোনো অনিচ্ছাকৃত ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে, তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং সবার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী। শিবচরবাসীর কাছেও আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি। আমাদের কর্মকাণ্ডে যদি কারও মনে আঘাত লেগে থাকে, তা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত—দয়া করে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন," — বলেন তারা।

এদিকে, এর একদিন আগে ৮ আগস্ট রাত ৯টা ৮ মিনিটে এনসিপির চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী এ ইউ মাসুদ (আরফান উদ্দিন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে দল ছাড়ার ঘোষণা দেন। এনসিপির সাতকানিয়া কমিটিতে তিনি ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্বে ছিলেন।

শিবচরের পদত্যাগী নেতারা জানান, তারা প্রথমে জাতীয় নাগরিক কমিটির কর্মী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। দেশ গঠনের লক্ষ্যে এক আদর্শিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এনসিপিতে যোগ দিলেও দলের বাস্তবতা ও পারিবারিক চাপ মিলিয়ে এখন তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

"আমরা শিবচর উপজেলার কর্মী হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। দেশের কল্যাণ এবং একটি নতুন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে আমরা এ সংগঠনে যোগ দিয়েছিলাম। পরে এ কমিটি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এমসিপি) নামে পরিচিতি লাভ করলে আমরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে দলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাই। আমরা কোনো রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসিনি। কোটা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ের গণআন্দোলনে ছাত্রসমাজের পাশে থেকে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছি," — বলেন তারা।

তারা আরও জানান, রাজনীতিতে তাদের সরাসরি অভিজ্ঞতা না থাকলেও দেশপ্রেম এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই দলটিতে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় পরিবেশ ও পারিবারিক টানাপোড়েনে তারা এখন রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।