পল্লবী হত্যাকাণ্ড: যুবদল নেতার মৃত্যু রাজনৈতিক আধিপত্যের জেরে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:০০ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানীর পল্লবী থানার যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়া (৫০) হত্যার রহস্য উদঘাটন করে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেপ্তাররা হলেন হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল (৩০) এবং মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন (৩৫)। দুজনেই মিরপুরকেন্দ্রিক ‘ফোর স্টার গ্রুপের’ সক্রিয় সদস্য।
র্যাব জানিয়েছে, পল্লবীর রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল এবং এতে অর্থের লেনদেনও ছিল।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, “গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পল্লবীর সি ব্লক, বিক্রমপুর সেনিটারি ও হার্ডওয়্যার দোকানে ছয়জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে বুকে ও পিঠে গুলি করে গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করে। পালানোর সময় তারা স্থানীয় জনতার ওপরও গুলি চালায়, যার ফলে একজন রিকশাচালক গুরুতর আহত হন। পরে জনতা ধাওয়া করে জনি ভূইয়াকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।”
ঘটনার পরপরই র্যাব-৪ একটি আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং অন্যান্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে। এর ধারাবাহিকতায় ১৮ নভেম্বর রাতে সাভার থানাধীন বিরোলিয়া এলাকা থেকে মো. মনির হোসেন সোহেল এবং টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজার বস্তি এলাকা থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছিল। দুজনেই পেশাদার হত্যাকারী এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। পাতা সোহেলের নামে পল্লবী থানায় মোট ৮টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে হত্যা, ডাকাতি ও মাদক মামলাও অন্তর্ভুক্ত।
লে. কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, “ফোর স্টার গ্রুপ মিরপুর এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল। হত্যাকাণ্ডে অর্থ সরবরাহের বিষয়টি সোহেল দেখাশোনা করেছিলেন। তবে অর্থ কোথা থেকে এসেছে তা এখনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “হত্যার মূল কারণ হলো মিরপুরকেন্দ্রিক রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা। নিহত গোলাম কিবরিয়া রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন এবং পূর্বে যাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল, রাজনৈতিক মেরুকরণের পর তাদের বিরুদ্ধে তিনি কাজ করছিলেন। হয়তো এ কারণেই তার ওপর হামলা হয়েছে।”
র্যাব নিশ্চিত করেছে, হত্যাকাণ্ডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্ভাব্য সংযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সকল সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করলে পুরো রহস্য উদঘাটিত হবে।