জুলাই গণহত্যা মামলা: সাবেক আইজিপি মামুনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:০৫ এম, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে। একসময় এই মামলার আসামি থাকলেও পরে রাজসাক্ষী হন তিনি। এ মামলায় বর্তমানে পলাতক রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
১৩ নভেম্বর সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজনভ্যানে করে কারাগার থেকে মামুনকে ট্রাইব্যুনালে আনে পুলিশ। সকাল ৯টার কিছু পরই তাকে ট্রাইব্যুনাল-১ এ হাজির করা হয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল আজ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করবেন।
দীর্ঘ এক বছর ধরে কারাগারে থাকা চৌধুরী মামুন ট্রাইব্যুনালে ইতোমধ্যেই সাক্ষ্য দিয়েছেন রাজসাক্ষী হিসেবে। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, তার শাস্তির বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছে তারা।
৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে ২৩ অক্টোবর শেখ হাসিনার মামলায় সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার বিচারের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন ট্রাইব্যুনালে। এরপর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তির জবাব দেন। স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেনও প্রসিকিউশনের বক্তব্যের কিছু বিষয়ে পাল্টা মত দেন। সব দিক বিবেচনায় রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করা হয়। ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানিয়েছে, রায় আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন ঘোষণা হতে পারে।
চলতি বছরের ৩ আগস্ট শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হয়ে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন খোকন চন্দ্র বর্মণ। ৮ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব সম্পন্ন হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর প্রসিকিউশন ও প্রতিরক্ষার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যাকাণ্ড এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার, যেখানে তথ্যসূত্র রয়েছে ২,০১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ ৪,০০৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২,৭২৪ পৃষ্ঠা। মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে মামলার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়।