আবু সাঈদ হত্যা: ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন পুলিশ সদস্য
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:৫৫ এম, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
রংপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ১৩তম দিনে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। মামলায় সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ মোট ৩০ জন আসামি রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলের সামনে সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এদিন পুলিশের নায়েক আবু বকর সিদ্দিক তার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দিচ্ছেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করছেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তার সঙ্গে আছেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মঈনুল করিম, সাইমুম রেজা তালুকদার, আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও অন্যান্যরা।
এর আগে বুধবার (১২ নভেম্বর) সাক্ষ্য দেন এসআই (সশস্ত্র) মো. আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, রংপুর কোতোয়ালি জোনের তৎকালীন এসি মো. আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে গুলিবর্ষণ চলার সময় আবু সাঈদ শহীদ হন। পরে তাকে জেরা করেন পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে নিযুক্ত চারজন আইনজীবী এবং উপস্থিত ছয় আসামির আইনজীবীরা।
এ মামলায় গত ১১ নভেম্বর ১৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং আন্দোলনকারীর একজন ছিলেন। ১০ নভেম্বর সাক্ষ্য দিয়েছেন জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান, যিনি ১২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। বিভিন্ন কারণে সাক্ষী না আসায় এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ৪ নভেম্বর, ২১ অক্টোবর ও ১৩ অক্টোবর তিনবার স্থগিত করা হয়েছিল।
গত ৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে পুলিশের দুই উপপরিদর্শক, এসআই রফিক ও এসআই রায়হানুল রাজ দুলাল জবানবন্দি দিয়েছিলেন। ২৯ সেপ্টেম্বর অষ্টম দিনে তিনজন, ২২ সেপ্টেম্বর সপ্তম দিনে সিয়াম আহসান আয়ানকে জেরা করা হয়, যিনি গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রথম ব্যক্তি ছিলেন।
এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২৮ আগস্ট, আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মাধ্যমে। একই দিনে সাংবাদিক মঈনুল হকও সাক্ষ্য দেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ছয় আসামি হলেন এএসআই আমির হোসেন, সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। তাদের উপস্থিতিতেই সাক্ষীরা ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিচ্ছেন।
মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয় ২৭ আগস্ট, সূচনা বক্তব্য দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় এখনও ২৪ জন পলাতক রয়েছেন, যারা ২২ জুলাই সরকারি খরচে নিযুক্ত চারজন আইনজীবীর মাধ্যমে নিজেদের পক্ষ থেকে শুনানি করছেন।
পলাতক আসামিদের পক্ষের শুনানি ৩০ জুলাই শেষ হয়। বিভিন্ন সময় শরিফুল ইসলাম, সুজন চন্দ্র রায় ও ইমরান চৌধুরীর জন্য পৃথক আইনজীবীরা লড়েছেন। প্রসিকিউশন অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি ২৮ জুলাই শেষ করে। ৩০ জুন ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করে এবং ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। মামলায় মোট ৬২ জন সাক্ষী রয়েছেন।