পাকিস্তানে ভয়াবহ হামলায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল, মেজরসহ ১১ সেনা নিহত
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৬:২৭ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে প্রাণঘাতী এক সন্ত্রাসী হামলায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল, মেজরসহ ১১ সেনাসদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে ওরাকজাই জেলায় এ ঘটনা ঘটে। বুধবার (৮ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আইএসপিআরের ভাষ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর একটি দল একটি গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক অভিযান শেষে ফেরার পথে হামলার শিকার হয়। অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যদের বহর লক্ষ্য করে ভারত-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ফিতনা আল খারেজ’ এবং নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) একত্রে হামলা চালায়। রিমোট কন্ট্রোল বিস্ফোরণের মাধ্যমে বহরের একটি গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই গাড়িতেই ছিলেন দুইজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা, যাঁরা ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “এর আগে, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে আমাদের সেনারা সফলভাবে ১৯ জন ভারত-সমর্থিত খারেজকে নরকে পাঠিয়েছে। কিন্তু ফেরার পথে হামলায় শহিদ হন প্লাটুন কমান্ডার ৩৯ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ তারিক, তাঁর সহকারী ৩৩ বছর বয়সী মেজর তায়্যব রাহাত এবং আরও নয়জন সাহসী সেনা।”
আইএসপিআর নিহতদের নাম প্রকাশ করেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন: নাইব সুবেদার আজম গুল (৩৮), নায়েক আদিল হুসাইন (৩৫), নায়েক গুল আমির (৩৪), ল্যান্স নায়েক শের খান (৩১), ল্যান্স নায়েক তালিশ ফারাজ (৩২), ল্যান্স নায়েক ইরশাদ হুসাইন (৩২), সিপাহী তুফায়েল খান (২৮), সিপাহী আকিব আলি (২৩) এবং সিপাহী মোহাম্মদ জাহিদ (২৪)।
হামলার পরপরই সম্ভাব্য জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে ওরাকজাই এলাকায় ‘স্যানিটাইজেশন অপারেশন’ শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। আইএসপিআর জানায়, ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াই চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক বিবৃতিতে নিহত সেনাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, “আমাদের সাহসী সেনানিদের আত্মত্যাগ কখনোই বৃথা যাবে না। ভারত-সমর্থিত জঙ্গিদের সমস্ত ষড়যন্ত্র চূর্ণ করে দেওয়া হবে।”
প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি সেনাবাহিনীর অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং শহিদ সেনাদের ‘জাতির সত্যিকারের বীর’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি শহিদ পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানান এবং তাঁদের আত্মত্যাগকে দেশের ঐক্য ও দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেন।
পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এক বিবৃতিতে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।