৫ দফা বাস্তবায়নে ৭ বিভাগে সমাবেশের ডাক জামায়াতসহ ৮ দলের
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:০৩ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে ঢাকা ছাড়া সাতটি বিভাগে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা ৮ দল। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৮ দলীয় লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
ব্রিফিংয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ। কর্মসূচি অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর রংপুরে, ১ ডিসেম্বর রাজশাহীতে, ২ ডিসেম্বর খুলনায়, ৩ ডিসেম্বর বরিশালে, ৪ ডিসেম্বর ময়মনসিংহে, ৫ ডিসেম্বর সিলেটে এবং ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগে সমাবেশ করবে দলগুলো।
মাওলানা ইউসুফ আশরাফ বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ ৫ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে ৮ দল। ইতোমধ্যে সরকার আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তবে চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি বা গণভোট নির্বাচনের আগে করার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু সরকার জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ফ্যাসিবাদীদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ফ্যাসিস্টদের প্রধান ‘লেডি ফেরাউন’-এর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে কেউ আর ফ্যাসিবাদী হওয়ার দুঃসাহস করবে না বলে আমরা মনে করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় বসবে তারা আর গুম ও খুনের রাজনীতি করার সাহস পাবে না। উন্মুক্ত আদালতের মাধ্যমে প্রদত্ত এই রায় ন্যায়বিচারসম্মত, উপযোগী এবং ইনসাফভিত্তিক।’
সমাবেশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইউসুফ আশরাফ জানান, শীর্ষ নেতারা জনমতকে দুর্নীতিমুক্ত ও দখলবাজমুক্ত সরকার গঠনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করবেন। এ লক্ষ্যে ৮ দলের বিভাগীয় লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হবে। যারা সমাবেশ বাস্তবায়ন ও পরবর্তী আন্দোলন পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে। সারা দেশে হত্যা ও খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে খেলাফত মজলিসের এই নেতা বলেন, ‘ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় খুন হচ্ছে। কয়েক দিন আগে পল্লবীতে বিএনপির একজন নেতা খুন হয়েছেন। এই যে খুন হচ্ছে, আমরা এর নিন্দা জানাই।’
সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও অংশগ্রহণমূলক করতে হলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।’ পিআর বা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ইউসুফ আশরাফ বলেন, ‘উচ্চ কক্ষে পিআর ব্যবস্থা জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, আদেশের মাধ্যমে যা সাময়িকভাবে বাস্তবায়িতও হয়েছে। গণভোটে “হ্যাঁ” জয়ী হলে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হবে।’
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমাদের এক নম্বর দাবি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি আদেশের মাধ্যমে হয়েছে। এরপর গণভোট, তারপর নির্বাচন ও সংসদ।’ তিনি বলেন, ‘গণভোটের রায় না হলে প্রথম দাবি পূর্ণ হয় না। তাই এটি নতুন সংযোজন নয়; পাঁচ দফার মধ্যেই “হ্যাঁ”-এর পক্ষে ক্যাম্পেইনের বিষয়টি রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম ও মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শরাফত হুসাইন।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন জাগপার সিনিয়র সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদেক হক্কানী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা তাওহিদুজ্জামান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির দপ্তর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল আলম এবং অর্থ সম্পাদক রিয়াজ হোসেন।