ভারতকে হারিয়ে হামজা
আমরা ১৮ কোটি মানুষকে খুশি করেছি
- খেলাধুলা ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:১৬ এম, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের পর বাংলাদেশ ফুটবলের সামনে অপেক্ষার নতুন স্বপ্ন। ২২ বছরের অপেক্ষা নয়—হয়তো মাত্র দুই বছরেই আসতে পারে আরও এক অর্জন। কারণ, এই দল এখন জিততে জানে; আর আছে হামজা চৌধুরীর মতো এক দৃঢ় যোদ্ধা।
মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে তীব্র লড়াই শেষে পাওয়া এ জয়ের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। লেস্টার সিটির এই মিডফিল্ডারও এ উচ্ছ্বাসে ভাসছেন। তাঁর কাছে এ জয় ঠিক এফএ কাপ জয়ের রোমাঞ্চেরই সমান। ২০২০–২১ মৌসুমে লেস্টারের হয়েই তিনি জিতেছিলেন ইংল্যান্ডের মর্যাদাপূর্ণ সেই ট্রফি।
গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল হামজার। এরপর আজ পর্যন্ত এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে খেলেছেন পাঁচ ম্যাচ। আগের চার ম্যাচে জয় না এলেও পঞ্চম ম্যাচেই অধরা সাফল্য ধরা দেয়।
ম্যাচ শেষে যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো—এ জয় কি এফএ কাপ জয়ের চেয়েও বড়? হামজা বিন্দুমাত্র না ভেবে বললেন, “বিভিন্ন কারণে, নিশ্চিতভাবেই। আজ আমরা ১৮ কোটি মানুষকে খুশি করেছি, তাই এর সঙ্গে অন্য কোথাও কিছুই তুলনা করা যায় না।”
বাংলাদেশ জার্সিতে প্রথম জয়ের স্বাদ যে তাঁর স্বপ্নপূরণেরই মতো, তা বলতেও ভোলেননি, “অবশ্যই আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে ইনশাআল্লাহ আমরা খুব শিগগির একটি টুর্নামেন্টের জন্য যোগ্যতা অর্জন করব।”
১১ মিনিটে শেখ মোরছালিনের গোলে এগিয়ে গিয়ে পুরো ম্যাচেই ভারত আক্রমণের চাপ ধরে রাখে। একের পর এক সুযোগ তৈরি করলেও গোলের দেখা মেলেনি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশ রক্ষণ অটল ছিল।
ভাগ্যের ভূমিকা ছিল কি না—এ প্রশ্নে হামজার দৃঢ় উত্তর, “ভাগ্য নিজেকেই তৈরি করতে হয়। আল্লাহর ইচ্ছায়, আমরা জিতেছি।”
তিনি আরও জানান, ড্রেসিংরুমে কঠিন সময় কাটালেও খেলোয়াড়েরা একসঙ্গেই এই মুহূর্ত উদ্যাপন করতে চেয়েছিলেন।
২০২৭ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে এই ম্যাচটিকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখেছেন খেলোয়াড়েরা। আগের ভুল ভেঙে এবার ফল আনতেই সবার দৃঢ়তা ছিল বেশি। হামজা বলেন, “এটি আমাদের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। কোচ বারবার বলছিলেন যে আমরা পারফরম্যান্স করছি, এখন আমাদের ফল দরকার।”
বাংলাদেশের কোচ হাভিয়ার কাবরেরা জয়টিকে স্বাভাবিক করতে চান দলের অভ্যাসে।
তিনি বলেন, “যেকোনো সময় ভারতকে হারানোর ক্ষমতা আমাদের আছে—এটাও মাথায় রাখা দরকার।”
একক কারও কৃতিত্ব নয়—জয়টি পুরো দলের সম্মিলিত শ্রমের ফল বলে মনে করেন তিনি। “আজ আমি একজনকে বেছে নিতে পারব না। প্রত্যেকেই দুর্দান্ত খেলেছে।”
শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার যে ভয় ছিল, এবার তা হয়নি। কাবরেরা জানতেন, তার খেলোয়াড়েরা ভুল পুনরাবৃত্তি করবে না। “আমি পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলাম, আমরা সবাই মিলে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব।”