জামিন পেতে মোবাইলে সুপারিশ, ঘুষ দিতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন পিপি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৪৬ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২৫
পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিনকে একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামির জামিনের জন্য ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. রুহুল আমিন সিকদার। ঘটনার পর জেলা আইনজীবী সমিতি তার প্রাথমিক সদস্য পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।
জানা যায়, বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে আসামির জামিনের আবেদন নিয়ে পিপি রুহুল আমিন ৫০ হাজার টাকার একটি খাম ও মামলার নথিপত্র বিচারকের বাসায় পাঠান। বিচারক এই ঘটনার লিখিত অভিযোগ ঢাকা বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর দাখিল করেন।
ঘটনার পর বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে জরুরি সভা ডাকেন জেলা আইনজীবী সমিতি। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে রুহুল আমিনের প্রাথমিক সদস্য পদ স্থগিত করা হয় এবং তাকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।
বিচারক অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, এর আগে পিপি রুহুল আমিন একই মামলায় দুই নম্বর আসামি মো. শাহাবুদ্দিন মুন্সীর জামিনের জন্য হোয়াটসঅ্যাপে বার্তাও পাঠিয়েছিলেন। কোনো সাড়া না পেয়ে সরাসরি বাসায় ঘুষ পাঠানো তাকে অপমানিত ও ক্ষুব্ধ করেছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, রুহুল আমিন বিভিন্ন মামলায় আসামিপক্ষের হয়ে তদবির করেছেন এবং আদালতের আদেশ না হলে সাংবাদিক ডেকে আনেন। জুলাই শহীদের কন্যাকে ধর্ষণের মামলাতেও তিনি আসামিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
ঘটনার বিষয়ে রুহুল আমিন সিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি পাবলিক প্রসিকিউটর হওয়ার পরই নানা ধরনের ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যবাহী সমিতি কখনো ঘুষ, দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি প্রশ্রয় দেয় না। অভিযোগ পেয়ে জরুরি সভা ডাকাই হলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।”
এ ঘটনায় রেজুলেশনের কপি জেলা প্রশাসক, দুদক অফিস, আইন মন্ত্রণালয় এবং প্রধান বিচারপতির কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন সিকদার জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী জেলার রোকন। তিনি ২০২৫ সালে জামায়াতে ইসলামী প্যানেল থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।