আপার চ্যাপ্টার ক্লোজ: মাহমুদুর রহমান
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:৫০ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, “আপা আর ফিরবেন না, এই চ্যাপ্টার ক্লোজড।” একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জনগণকে সতর্ক করে বলেন, “ভারতের দালাল প্রার্থীদের ভোট দেবেন না।”
শনিবার (১৫ নভেম্বর) যশোরে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। বহুমাত্রিক জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র প্রাচ্যসংঘ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সুপ্রিম কাউন্সিল সদস্য আখতার ইকবাল টিয়া।
মাহমুদুর রহমান বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে দিল্লির সব ষড়যন্ত্র ও দাদাগিরি বন্ধ হয়ে যাবে।
তবে তার মতে, ভারত কোনোভাবে চায় না বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক বা একটি গণতান্ত্রিক সরকার গড়ে উঠুক। এই অবস্থায় তরুণদের দায়িত্ব নিতে হবে এবং প্রমাণ করতে হবে যে, ভারতের সাথে দালালি করে কেউ আর এদেশে ক্ষমতায় যেতে বা টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, দল-নিরপেক্ষ থেকে ভারতীয় প্রভাবমুক্ত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারলে সেই প্রতিনিধিরাই প্রয়োজনে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে নেতৃত্ব দেবেন।
বক্তৃতার শুরুতে তিনি জুলাই আন্দোলনের শহীদ আনাসকে স্মরণ করে বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে যখন একের পর এক তরুণ শহীদ হচ্ছিলেন, তখন আনাস মায়ের কাছে চিঠি লিখে সেই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। চিঠিতে তিনি বলেছিলেন যে, “আমার ভাইয়েরা যখন রাস্তায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুদ্ধে জীবন দিচ্ছেন, তখন আমি ঘরে থাকতে পারলাম না।”
আনাসদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে মাহমুদুর রহমান রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, শুধু ক্ষমতার জন্য লড়াই না করে তরুণদের স্বপ্নকে বুঝতে হবে এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ খুঁজতে হবে।
তিনি জানান, তিন মাস পর দেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেটি অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া অত্যাবশ্যক। এ জন্য শুধু সরকারের নয়, রাজনৈতিক দলগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের ঘোষণা দিতে হবে যে তারা “নির্বাচনে কারচুপি করবেন না, নির্বাচন সহযোগিতা করবেন এবং ফলাফল মেনে নেবেন।” এমনকি এ বিষয়ে একটি নিয়ম-নীতি বা চার্টার প্রণয়ন করার আহ্বান জানান তিনি।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, “চব্বিশের জুলাই বিপ্লব তরুণদের শুধু ফ্যাসিবাদের পতন ঘটায়নি, বরং একটি নতুন বন্দোবস্তের সুযোগ সৃষ্টি করেছে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার।” এটি কেবল অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তরুণদের স্বপ্নের প্রতি বেইমানি করলে জাতি কাউকে ক্ষমা করবে না- এ সতর্কবার্তাও দেন তিনি।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল মজিদ, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ এবং লেখক-অ্যাক্টিভিস্ট বেনজীন খান। আলোচনার আগে জুলাই বিপ্লবের চার ছাত্র প্রতিনিধির মধ্যে সামিউল ,আজিম এবং সোহান বক্তব্য রাখেন।