গণঅভ্যুত্থানের পর আইনশৃঙ্খলা অবনতির অভিযোগ বরিশালবাসীর

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বরিশালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় নাগরিকরা। আগে দিন-রাতে নিশ্চিন্তে চলাফেরা করা গেলেও এখন সেই পরিস্থিতি নেই বলে মন্তব্য করেন তারা। একই সঙ্গে মৌলিক সংস্কার, সুশাসন নিশ্চিতকরণ এবং যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতে সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানান বরিশালের মানুষ।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর বান্দ রোডের একটি অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘জাতীয় নির্বাচনে নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনায় এসব দাবি ও মতামত উঠে আসে। লিখিত অনলাইন ভোটিংয়েও নাগরিকরা বিভিন্ন প্রস্তাব পেশ করেন।

সভায় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, বাসদ, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং বহু পেশার মানুষ অংশ নেন।

প্রধান বক্তা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “চলমান ক্রান্তিকালীন সময়ে দেশবাসী সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং মর্যাদাপূর্ণ নির্বাচন চায়। নির্বাচন নিয়ে জনগণের শঙ্কা যে আছে, তা দূর করার দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপরই বর্তায়।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা নির্বাচনকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখতে চাই। এ লক্ষ্যে সংস্কারের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যে দলগুলো প্রতিশ্রুতি দেবে, তাদের সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। মানুষ কথা বলবে, নেতাদের তা শুনতে হবে। সে জন্য আমাদের কথাগুলো আমাদের বলতে হবে।”

বিগত দিনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ব্যবসায়ী, আমলা ও রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে দেশে এমন একটি অর্থনীতি তৈরি হয়েছিল, যাকে আমরা বলি চামচা পুঁজিবাদ। রাষ্ট্রতন্ত্র ব্যবহার করে সেখানে চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সংস্কারের মাধ্যমে সে চোরতন্ত্র ভাঙতে হবে। আমাদের এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে কেউ পেছনে না থাকে।”

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমির জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর, বিএনপির মহানগর কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন, বাসদের জেলা সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী, উন্নয়ন সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার জাহিদ, মহিলা পরিষদের জেলা সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা, বাপার বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক রফিকুল আলম, গণফোরামের সভাপতি আইনজীবী হিরণ কুমার দাস এবং এনসিপির জেলা আহ্বায়ক আবু সাঈদ মুসা।

সেমিনারজুড়ে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি আলোচনায় নানা প্রশ্ন, জবাব এবং সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।