কুষ্টিয়ায় পৌরসভা অফিসে রোলার চালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
- কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:৩৮ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার এক রোলার চালককে অফিস কক্ষের মধ্যে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে একই দপ্তরের সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে। নিহতের নাম শহিদুল ইসলাম কুটি (৫৮)। ঘটনায় অভিযুক্ত ফিরোজুল ইসলাম পৌরসভার সার্ভেয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পৌরসভার রোলার ড্রাইভার শহিদুল ইসলাম সকাল সোয়া ৯টার দিকে পৌরসভার অফিসে আসেন। এসময় শহিদুলসহ অন্যান্য কয়েকজন কর্মচারী বকেয়া বেতনের দাবিতে সোচ্চার হন। এ নিয়ে ফিরোজুলের সঙ্গে তাদের তর্ক হয়। এক পর্যায়ে শহিদুলকে মারধর করে ফিরোজুল। পরে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১০১ নম্বর কক্ষে শহীদুলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় তাৎক্ষণিকভাবে ওই কক্ষের তালা খুলে শহিদুলের নিথরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে পুলিশ সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে লাশ পাঠায়।
নিহত শহিদুলের মেয়ে সুবর্ণা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, পৌরসভার বড় কর্মকর্তাদের নিয়মিত বেতন হয়। কিন্তু আমার বাবা ছোট কর্মচারী। হওয়ায় তার নিয়মিত বেতন হয় না। বকেয়া বেতন চাইতে গেলে পৌরসভার সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলাম আমার বাবা শহিদুলকে কিলঘুষি ও লাথি মেরে হত্যার পর মরদেহ একটি কক্ষে ফেলে রাখে। আমি হত্যাকারী ফিরোজের বিচার চাই।
নিহত শহিদুলের ভাগ্নি রূপালী খাতুন বলেন, পৌরসভার ঠিক পেছনেই আমার বাড়ি। খবর শুনে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং তালাবদ্ধ ১০১ নম্বর কক্ষের মধ্যে মামা শহিদুলের নিথরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। বকেয়া বেতনের দাবি করা হলে পৌরসভার লোকজন আমার মামাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমারখালী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. আকরামুজ্জামান বলেন, বকেয়া বেতন নিয়ে রোলার চালক ও সার্ভেয়ার ফিরোজের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে রোলার ড্রাইভার শহিদুল স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
তবে নিহতের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, নিহতের পরিবার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সার্বিক সহায়তা করা হবে বলে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার ফিরোজের মোবাইল ফোনে একাধিক কল করার পরও তিনি রিসিভ করেননি এতে তার বক্তব্য জানা যায়নি। তাছাড়া ঘটনার পর তিনি পৌরসভা অফিস ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শহিদুলের মরদেহ উদ্ধার করেন কুমারখালী থানার এসআই দিপন কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। এতে লাশের ঠোঁটের উপর রক্তাক্ত জখম ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।
কুমারখালী থানার ওসি খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি স্ট্রোকজনিত মৃত্যু নাকি হত্যাকাণ্ড তা ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে। যদি পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়, তদন্ত করে সেটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।