ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে হ্যারিকেন অ্যারিন

মাত্র এক দিনের ব্যবধানে ভয়ংকর শক্তি সঞ্চয় করে মহাশক্তিশালী ক্যাটাগরি-৫ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে হ্যারিকেন অ্যারিন। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬০ মাইল বা প্রায় ২৬০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে এর স্থায়ী বাতাস। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ঝড়টি আরও শক্তি অর্জন করতে পারে।

এই প্রবল ঘূর্ণিঝড় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলজুড়ে প্রাণঘাতী ঢেউ ও বিপজ্জনক রিপ কারেন্টের সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রিপ কারেন্ট হলো সমুদ্রসৈকতের কাছাকাছি অঞ্চলে সৃষ্ট এক ধরনের শক্তিশালী ও সরু স্রোত, যা তীর থেকে সরাসরি গভীর সমুদ্রে প্রবাহিত হয়।

শনিবার (১৬ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হ্যারিকেন সেন্টারের পরিচালক মাইক ব্রেনান এক ব্রিফিংয়ে জানান, ঝড়টি রাতারাতি “অত্যন্ত শক্তিশালী” রূপ নিয়েছে এবং “বিস্ফোরকভাবে গভীর ও তীব্র” আকার ধারণ করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, শুক্রবার পর্যন্ত এটি ছিল কেবল একটি ট্রপিক্যাল স্টর্ম।

বিবিসির তথ্যমতে, বর্তমানে অ্যারিন ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থান করছে। এই সপ্তাহান্তে এটি লিওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জ, ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ ও পুয়ের্তো রিকোর উত্তর দিক অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে সর্বোচ্চ ৬ ইঞ্চি বা ১৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি করবে।

এটি চলতি বছরের আটলান্টিক মৌসুমের প্রথম হ্যারিকেন। তবে আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই।

মাইক ব্রেনান আরও জানান, মাত্র ২৪ ঘণ্টায় অ্যারিনের বাতাসের গতি অন্তত ৩৪ মাইল বেড়েছে। শুক্রবার ভোরে ঘণ্টায় ১০০ মাইল বেগে বইছিল বাতাস, যা শনিবারে গিয়ে ১৬০ মাইল বা ২৬০ কিলোমিটারে পৌঁছায়।

পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, এই সপ্তাহে অ্যারিন ধীরে ধীরে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বাহামার পূর্ব পাশ ঘেঁষে উত্তর ক্যারোলিনার আউটার ব্যাংকস অঞ্চলের দিকে যাবে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলজুড়ে প্রাণঘাতী ঢেউ ও রিপ কারেন্ট সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে ফ্লোরিডা ও মিড-অ্যাটলান্টিক অঞ্চলে ঢেউ সবচেয়ে ভয়াবহ হতে পারে। বারমুডাতেও তীব্র ঢেউ ও ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে প্রবল বাতাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ড সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের সেন্ট থমাস ও সেন্ট জন দ্বীপের বন্দরগুলোতে এবং পুয়ের্তো রিকোর ছয়টি পৌরসভায় জাহাজ চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে।

মার্কিন জাতীয় মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডল প্রশাসন (এনওএএ) এর আগে সতর্ক করে জানিয়েছিল, এ বছর আটলান্টিক মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সংখ্যক হ্যারিকেন দেখা দিতে পারে। সংস্থাটি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্যাটাগরি-৪ ও ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার শক্তিশালী ঝড়ের প্রবণতা বাড়ছে।