নেতানিয়াহু ‘যুদ্ধের নায়ক’, মনে হয় আমিও তাই: ট্রাম্পের মন্তব্য
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:৫২ পিএম, ২০ আগস্ট ২০২৫
দীর্ঘদিন ধরে গাজা ভূখণ্ডে চলা ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থাকলেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ‘যুদ্ধের নায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার টিআরটি ওয়ার্ল্ড প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও, মঙ্গলবার রক্ষণশীল রেডিও উপস্থাপক মার্ক লেভিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “তিনি ভালো মানুষ। তিনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন... তিনি যুদ্ধের নায়ক, কারণ আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। তিনি যুদ্ধের নায়ক। মনে হয় আমিও তাই।”
সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে accountability বা জবাবদিহির বিষয়েও মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “তারা তাকে জেলে ঢোকানোর চেষ্টা করছে।” তবে ট্রাম্পের মন্তব্য আইসিসির পরোয়ানা না কি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির মামলার প্রসঙ্গে ছিল, তা স্পষ্ট নয়।
নেতানিয়াহু ২০২০ সাল থেকে দুর্নীতির অভিযোগে বিচারাধীন। তিনি ইসরায়েলের ইতিহাসে ক্ষমতাসীন অবস্থায় ফৌজদারি বিচারের মুখে পড়া প্রথম প্রধানমন্ত্রী। ২০২৪ সালের নভেম্বরে আইসিসি নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া গাজায় ধ্বংসাত্মক অভিযান চালানোর কারণে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ও সেনাপ্রধান আইয়াল জামির গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনায় নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছেন। সেনাবাহিনী ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনাকে ডাকতে প্রস্তুত এবং অতিরিক্ত ২০ হাজার সেনার মেয়াদ ৪০ দিন বাড়ানো হচ্ছে।
চ্যানেল ১২ জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাটজ ও জামির দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড, জেনারেল স্টাফ, সামরিক গোয়েন্দা, অপারেশন বিভাগ ও শিন বেতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে জামির গাজা দখলের ধাপ তুলে ধরেন, যার মধ্যে উত্তর গাজায় সেনা উপস্থিতি বাড়ানো অন্যতম।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজায় চালানো অভিযানে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ও ফিলিস্তিনিরা এটিকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। অভিযানে গণহত্যা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, ধ্বংসযজ্ঞ এবং খাদ্য সংকট তৈরি করার অভিযোগ রয়েছে।
এখন পর্যন্ত এ অভিযানে ৬২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত, ১ লাখ ৫৬ হাজার আহত এবং ১০ হাজারের বেশি নিখোঁজ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ।