সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণে আফগানিস্তানকে চীন-পাকিস্তানের আহ্বান


সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণে আফগানিস্তানকে চীন-পাকিস্তানের আহ্বান

আফগানিস্তানে তালেবান শাসকদের প্রতি সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে চীন ও পাকিস্তান। তারা বলেছে, আফগান মাটিতে সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তান ও চীনের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে। পাশাপাশি, চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর (সিপিইসি) আফগানিস্তান পর্যন্ত সম্প্রসারণের আগ্রহও পুনর্ব্যক্ত করেছে দুই দেশ। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

এই আহ্বান জানানো হয়েছে কাবুলে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান-আফগানিস্তান-চীন ত্রিপক্ষীয় সংলাপের ষষ্ঠ বৈঠকে। তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর কাবুলে এটি প্রথমবারের মতো এ ধরনের বৈঠক। সংলাপে নিরাপত্তা ইস্যু প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল। পাশাপাশি, পাকিস্তান ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আফগান নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকও করেছেন।

জাতিসংঘের মূল্যায়নে বলা হয়, ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএস-কে), তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), ইস্ট তুর্কেস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম) এবং আল-কায়েদা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তান ও চীনের স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি বলে বিবেচিত।

চীনের মধ্যস্থতায় গত মে মাসে অনুষ্ঠিত এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে নিরাপত্তা সমন্বয় জোরদারের প্রতিশ্রুতি পায় পাকিস্তান। বেইজিং তখন জানায়, আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক প্রকল্প, বিশেষ করে মেস আইনাক কপার খনি উন্নয়নের ভবিষ্যৎ ইটিআইএম দমনের ওপর নির্ভর করবে।

এবারের সংলাপে আফগান ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কে উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা, বিশেষত সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতায় অগ্রগতি খুব ধীর।”

তিনি তালেবান প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ব্যর্থতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং টিটিপি ও বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির বিরুদ্ধে “সুনির্দিষ্ট ও যাচাইযোগ্য ব্যবস্থা” নেওয়ার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ চলতি বছরের জুলাইয়ে জানায়, তালেবানদের সহযোগিতায় আফগানিস্তানে টিটিপি’র প্রায় ছয় হাজার যোদ্ধা সক্রিয় রয়েছে। তারা উন্নত অস্ত্র, আইএস-কে ও আল-কায়েদার সহায়তায় এবং বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের শেষার্ধে পাকিস্তানে ৬০০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে, যাতে প্রায় এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

চীনের মধ্যস্থতায় এ বছর কাবুল-ইসলামাবাদ সম্পর্ক কিছুটা উন্নতি পেলেও তা এখনো পূর্ণমাত্রায় স্থিতিশীল হয়নি। পাকিস্তান আবারও রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু করেছে। জুলাইয়ে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি তালেবান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিন হাক্কানির সঙ্গে বৈঠক করে সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ সমন্বয় কমিটি পুনরায় চালুর ঘোষণা দেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×