চীনের কাছে ৫০০টি উড়োজাহাজ বিক্রির আলোচনায় মার্কিন কোম্পানি বোয়িং


চীনের কাছে ৫০০টি উড়োজাহাজ বিক্রির আলোচনায় মার্কিন কোম্পানি বোয়িং

মার্কিন বিমান নির্মাতা জায়ান্ট বোয়িং জানিয়েছে, তারা চীনের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে প্রায় ৫০০টি বিমান বিক্রির বিষয়ে আলোচনা করছে। বৃহস্পতিবার ব্লুমবার্গ একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সম্ভাব্য চুক্তি বাস্তবায়িত হলে সংকট মোকাবিলায় থাকা বোয়িংয়ের জন্য তা হবে বড় ধরনের স্বস্তির খবর। তথ্য প্রকাশের পর শেয়ারবাজারে বোয়িংয়ের শেয়ারের দাম এক পর্যায়ে ৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। তবে মঙ্গলবার বাজার খোলার ১৫ মিনিট পরেই বৃদ্ধি নেমে আসে এক শতাংশের নিচে।

ব্লুমবার্গকে দেওয়া একাধিক সূত্র জানায়, এই চুক্তি নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য সমঝোতার ওপর। সম্ভাব্য ক্রয় পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠতে পারে। এরই মধ্যে চীনা কর্মকর্তারা দেশটির অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইনের চাহিদা যাচাই শুরু করেছেন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে একাধিক বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতিকে ‘‘অন্যায্য আচরণের প্রমাণ’’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো বোয়িং। দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর অঙ্গীকারে ট্রাম্পের বিভিন্ন চুক্তিতে বোয়িংয়ের বিক্রি প্রায়ই গুরুত্ব পায়। গত জুলাইয়ে হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, জাপান ১০০টি এবং ইন্দোনেশিয়া ৫০টি বোয়িং বিমান কেনার অঙ্গীকার করেছে—যা মূলত মার্কিন শুল্ক এড়ানোর অংশ হিসেবে গৃহীত হয়।

ব্লুমবার্গ আরও জানায়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাঠামো নতুনভাবে সাজাতে ট্রাম্প চীনকে বিশেষভাবে টার্গেট করেছেন। চলতি বছর দুই দেশ একে অপরের পণ্যের ওপর পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করে, যা তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বড় ধরনের বাধা তৈরি করে। এমনকি বোয়িংয়ের বিমান সরবরাহও কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তবে মে মাসে দুই দেশ সাময়িকভাবে শুল্ক কমানোর বিষয়ে একমত হয় এবং এরপর থেকে ৯০ দিনের সময়সীমা বাড়িয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

২০১৭ সালের নভেম্বরে ট্রাম্পের বেইজিং সফরের সময় সর্বশেষ বড় চুক্তি করেছিল চীন। সে সময়ে বেইজিং বোয়িং থেকে ৩০০টি এক ও দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট বিমান কেনার প্রতিশ্রুতি দেয়, যার মূল্য ছিল ৩৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

এদিকে চলতি বছরের জুলাইয়ে বোয়িং জানায়, ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের ক্ষতি আগের বছরের তুলনায় কমেছে এবং তারা ২০১৮ সালের পর সবচেয়ে বেশি উড়োজাহাজ সরবরাহ করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি এখনও মান নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত চাপের মধ্যে রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের ফিউজলাজ প্যানেল বিস্ফোরণ এবং এর আগের ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা কোম্পানির ভাবমূর্তিকে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে।

সূত্র: এএফপি

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×