গাজা সীমান্তে সামরিক ঘাঁটি তৈরীর পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:২৮ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০২৫
ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্তে বড় ধরনের একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ইসরায়েলি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম ‘শরিম’ জানিয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৫০ কোটি ডলার ব্যয় হতে পারে।
মার্কিন সরকার এই ঘাঁটিতে ‘হাজারের বেশি সেনা ও ভারী অস্ত্র’ মোতায়েন করার পরিকল্পনা করছে। খবরটি ইরানি গণমাধ্যম প্রেস টিভি শরিমের বরাত দিয়ে প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে মধ্যপ্রাচ্যে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখা হচ্ছে, এবং অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে ‘নতুন আগ্রাসনের ইঙ্গিত’ বহন করছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘাঁটি মার্কিন প্রশাসনকে ইসরায়েলের সরাসরি সমন্বয় ছাড়াই কাজ করার স্বাধীনতা দেবে এবং পরিস্থিতি নিজেদের মতো করে পরিচালনার সুযোগ তৈরি করবে। গত সপ্তাহে আমেরিকার একটি প্রতিনিধি দল সম্ভাব্য অবস্থান নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যখন গাজায় চলমান ‘গণহত্যামূলক যুদ্ধ’ নিয়ে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ বাড়ছে, তখন এই পরিকল্পনার খবর প্রকাশ পেয়েছে। তারা বলছেন, ইসরায়েল হয়তো আন্তর্জাতিক চাপ কমাতে সাময়িকভাবে নিজের লক্ষ্য পূরণের জন্য মিত্রদের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এই উদ্যোগকে ‘এক দখলদারিত্বকে অন্য দখলদারিত্ব দিয়ে প্রতিস্থাপন’ হিসেবে দেখছেন, অর্থাৎ ইসরায়েলি সেনাদের জায়গায় বিদেশি সৈন্য মোতায়েনের প্রচেষ্টা।
নভেম্বরের শুরুতে গাজার হামাস আন্দোলনের সিনিয়র নেতা মুসা আবু মারজুক আল জাজিরা বলেছেন, ‘আমরা এমন কোনো সামরিক বাহিনী মেনে নিতে পারি না, যা গাজায় দখলদার সেনাবাহিনীর বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।’
এর আগে ওয়াশিংটন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছিল, যেখানে ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)’ নামে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের কথা বলা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, এই বাহিনী যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, কাতার ও মিশরের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে এবং অন্তত দুই বছর গাজায় অবস্থান করবে।
সমালোচকেরা বলছেন, পুনর্গঠন ও নিরাপত্তার অজুহাতে মূলত গাজাকে ‘অস্ত্রহীন’ করা এবং প্রতিরোধ কাঠামো ভেঙে দেওয়ার লক্ষ্যই প্রকল্পের আসল উদ্দেশ্য। তারা মনে করছেন, এই পরিকল্পনা ইসরায়েলি দখলদারিত্ব, যুদ্ধাপরাধের দায়বদ্ধতা, ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষতিপূরণের অধিকার সম্পর্কিত মূল সমস্যাগুলোকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করছে। মার্কিন ঘাঁটি স্থাপনের নতুন খবরের পর এই উদ্বেগ আরও তীব্র হয়েছে।
সূত্র: প্রেস টিভি