ফিলিস্তিনের ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করলো ইসরায়েল, কারফিউ জারি
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:২৭ এম, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
হেবরনের প্রাচীন শহরে ইসরায়েলি বাহিনী কারফিউ জারি করে ফিলিস্তিনিদের চলাচল সীমিত করেছে এবং ইব্রাহিমি মসজিদ মুসলিমদের জন্য বন্ধ রেখেছে, যাতে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা ইহুদি ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) স্থানীয় কর্মীরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
বেসরকারি হেবরন ডিফেন্স কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী আরেফ জাবের বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে বলেন, শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকাল থেকে পুরোনো শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে কারফিউ কার্যকর ছিল। তিনি জানান, “ইসরায়েলি বাহিনী পুরোনো শহরে প্রবেশের সামরিক চেকপয়েন্টগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে কেউ ঢুকতে বা বেরোতে পারছিল না। অনেক ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িতে ফিরতে না পেরে হেবরনের অন্যত্র আত্মীয়দের বাসায় রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছিলেন।”
জাবের আরও উল্লেখ করেন, “শত শত অবৈধ বসতি স্থাপনকারী শুক্রবার রাত এবং শনিবার সকাল; উভয় সময়ই পুরোনো শহরে প্রবেশ করে ভারী সৈন্য-প্রহরায় ‘উসকানিমূলক’ শোভাযাত্রা করেছে।” তিনি বলেন, এই কারফিউ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ইব্রাহিমি মসজিদের বাকি অংশ দখল করে সেটিকে সিনাগগে রূপান্তরের প্রচেষ্টার অংশ।
এই উৎসবটি ‘সারাহ’স ডে’ নামে পরিচিত, যা হেবরনে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় এবং শহরের ঐতিহাসিক ইহুদি উপস্থিতিকে উদযাপন করে।
ফিলিস্তিনি ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শুরুর দিক থেকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন ইব্রাহিমি মসজিদের সুক গেট বন্ধ রাখছে এবং পূর্ব গেট জানালাসহ বন্ধ অবস্থায় রেখেছে।
পুরোনো হেবরনের এই মসজিদ সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন, যেখানে প্রায় ৪০০ অবৈধ বসতি স্থাপনকারীকে পাহারা দিতে প্রায় ১,৫০০ ইসরায়েলি সেনা মোতায়েন রয়েছে।
১৯৯৪ সালে এক অবৈধ বসতি স্থাপনকারীর হামলায় ২৯ ফিলিস্তিনি উপাসক নিহত হওয়ার পর মসজিদটি ভাগ করা হয়; ৬৩ শতাংশ ইহুদি উপাসনার জন্য এবং ৩৭ শতাংশ মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ করা হয়। ইহুদি অংশের মধ্যে আজানের কক্ষও রয়েছে।
ইসরায়েলের একতরফা ব্যবস্থায় বছরে ১০ দিন ইহুদি ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে মসজিদটি মুসলিমদের জন্য পুরোপুরি বন্ধ থাকে এবং ১০টি ইসলামিক উৎসবের দিনে এটি পুরোপুরি ইহুদিদের জন্য বন্ধ থাকে। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গাজা যুদ্ধের পর থেকে মুসলিমদের ধর্মীয় দিবসে পূর্ণ প্রবেশাধিকারের নিয়ম আর প্রায়শই মানা হচ্ছে না।