ক্রিটিসাইজ করবেন, তবে ভালো কাজের প্রশংসাও করতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৫৫ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের অর্থনীতি নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেলেও সম্ভাবনার দুয়ার এখনও খোলা রয়েছে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শুধু সমালোচনা নয়, অর্জনগুলোর স্বীকৃতিও দিতে হবে। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা ক্রিটিসাইজ করবেন। পাশাপাশি ভালো কাজগুলোর প্রশংসাও করতে হবে।”
রোববার ১৬ নভেম্বর সকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘নগদ-ডিআরইউ-বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আইএমএফ বলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনেক সমস্যা। কিন্তু তারাই আবার আমাদের পার্সোনালি জানিয়েছে, অনেক দেশের চেয়ে আমরা ভালো করছি। কাজেই ক্রিটিসাইজ করবেন, তবে আমাদের ভালো দিকগুলো নিয়েও প্রশংসা করতে হবে।”
ড. সালেহউদ্দিন জানান, গতবছর আগস্টে দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিস্থিতি তাদের প্রত্যাশার চেয়েও কঠিন ছিল। তার ভাষায়, “যা দেখেছি, তার সবটা বলা যাবে না, বলা ঠিকও হবে না। আমরা দায়িত্ব না নিলে দেশের অর্থনীতি যে কোথায় যেত, তা কল্পনার বাহিরে। আমরা চেষ্টা করছি ফাঁটল বন্ধ করতে। তবে আগামী নির্বাচিত সরকারের অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। বাকিটা তাদের করতে হবে।”
আগামী সরকারের জন্য কিছু কাজ এগিয়ে রেখে যাওয়ার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “আমাদের সমালোচনা করবেন, আমাদের ভুলগুলো আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে ধরিয়ে দেবেন। তাহলে আমরা আরো বেশি কাজ করতে পারবো।”
নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি যোগ করেন, “বিদেশি সার্টিফিকেট নিয়ে আমরা বাহ্ বাহ্ নেব না, আমাদের নিজ উদ্যোগে এগিয়ে যেতে হবে। গণজনের জন্য সেবা বাড়াতে হবে।”
সাংবাদিকদের পুরস্কার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার কঠিনতার দিকে ইঙ্গিত করেন। “পরীক্ষার খাতা দেখার চেয়েও বেশি কষ্টকর সাংবাদিকদের রিপোর্টের মান যাচাই করা। আমি নিজেও একসময় শিক্ষার্থীদের পড়াতাম। আমি জানি মূল্যায়ন করা কতটা কষ্টকর। এগুলো যারা মূল্যায়ন করেছেন, তারা দেশের স্বার্থেই কাজ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “জার্নালিস্টদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেজন্য হয়ত তারা সবকিছু তুলে ধরতে পারে না। তবে এই সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে সমাজের দর্পণ হিসেবে আপনাদের কাজ করে যেতে হবে।”
যদিও শিক্ষকতায় আর ফিরবেন না বলে জানান ড. সালেহউদ্দিন, তবুও দেশের অর্থনীতি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা তার অটুট। তিনি বলেন, “আমার অনেক ছাত্র এখন দেশের অর্থনীতির বড়ো বড়ো জায়গাগুলোতে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও আমার পরোক্ষ ছাত্র ছিলেন। শিক্ষকতা পেশায় আমার একটা টান রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে শিক্ষকতা পেশায় না ফিরলেও দেশের অর্থনীতি নিয়ে কাজ করতে চাই।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নগদের চেয়ারম্যান কায়জার আহমেদ চৌধুরী, নগদের বাংলাদেশ ব্যাংক নিযুক্ত প্রশাসক মোতাছিম বিল্লাহ, ডিআরইউ’র সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এবং কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে মোট ২৭টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়, যার মধ্যে প্রিন্ট-অনলাইন এবং টেলিভিশন-রেডিওর ২৫টি মূল ক্যাটাগরির বাইরে সব ধরনের মিডিয়ার জন্য দুটি বিশেষ পুরস্কার যুক্ত ছিল। প্রায় চার শতাধিক জমা পড়া রিপোর্ট থেকে বাছাই করে নির্বাচিত হয় বছরের সেরা ২৭টি প্রতিবেদন। যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা জুরি বোর্ডে ছিলেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ১০ জন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, আর বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ।