নির্বাচনের সম্মান নষ্ট হলে তরুণ প্রজন্ম আরেকটা বিপ্লবে যেতে পারে: নাসীরুদ্দীন
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৫৩ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার মর্যাদা নিয়ে তরুণ প্রজন্মের আস্থা ভেঙে গেলে তা নতুন ধরনের আন্দোলনে রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তার মতে, তরুণদের উদ্যম ও বিশ্বাস ধরে রাখতে নির্বাচনী পরিবেশে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সুযোগ রাখা যাবে না।
বুধবার ১৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই তরুণ প্রজন্ম যেহেতু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, এটা ফেস্টিব মোড় করতে আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একটু একটিভ করবেন। যদি একটু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, হয়তোবা তরুণ প্রজন্মের নির্বাচনের প্রতি যেই সম্মানবোধ আসছে, সেটা যেন নষ্ট না হয়। যদি এটা আরেকবার নষ্ট হয়, হয়তোবা তারা আরেকটি বিপ্লবের দিকে চলে যাবে।’
আসন্ন নির্বাচনে গণভোট পরিচালনার কাঠামো স্পষ্ট না হওয়াকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর ভাষায়, ‘গণভোট কীভাবে পরিচালিত হবে, এটি কবে বাস্তবায়ন করা হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ- প্রতারণা প্রতিরোধের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেওয়া হয়েছে কি না নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত এগুলো প্রকাশ করতে হবে।’
তিনি বলেন, কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এনসিপি সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে প্রস্তুত এবং প্রয়োজন হলে সহযোগিতাও দেবে।
ইসির পূর্ণ স্বাধীনতা বজায় রাখার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করে তিনি যোগ করেন, ‘যদি কমিশন সব রাজনৈতিক দল থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকে, তাহলে এনসিপি ১০০ শতাংশ সহযোগিতা প্রদান করবে। আমরা অন্যান্য সহযোগী দলকেও কো-অপারেশন মোডে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
নারী ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাবও রাখেন তিনি। উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইলেকশনের সময় নারীরা সাইবার হ্যারাসমেন্টের শিকার হতে পারেন, তাই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন।’
প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের জন্য সময় সীমিত। যদি প্রক্রিয়া আগে থেকে চালু করা হয়, তাহলে অংশগ্রহণ বাড়বে, যা ভোটার সংখ্যা ও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে।’
এছাড়া তিনি মনে করেন, নির্বাচনী প্রতীক ও প্রার্থীর পরিচয়ের স্বচ্ছতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রতীকই ভোটারদের কাছে প্রার্থীর পরিচয় স্পষ্ট করে।
প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একজন করে অফিসার সংযুক্ত করার প্রস্তাবও দেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তার মতে, এতে করে দলগুলো তাদের উদ্বেগ ও পরামর্শ সহজে কমিশনের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে।
নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তির পদক্ষেপ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি জানান, যাদের বয়স নির্বাচনের দিনে ১৮ পূর্ণ হবে, তাদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।
শেষে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পরে বাংলাদেশে একটি সুযোগ এসেছে, যেখানে প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীকে ভোটে অংশগ্রহণ করে তাদের পরিচয় প্রদর্শন করতে পারবে।’ তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার এবং একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।