টেনিস তারকার মৃত্যু: বাবার গুলিতে প্রাণ গেল রাধিকা যাদবের
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:২৩ পিএম, ২১ জুলাই ২০২৫
ভারতের উঠতি টেনিস তারকা রাধিকা যাদবের মৃত্যুর ঘটনাটি কোনো সিনেমার চিত্রনাট্য নয়, বরং বাস্তবের নির্মম এক ঘটনা—যেখানে মেয়ের হাতে গড়া সাফল্য শেষ পর্যন্ত থেমে গেল বাবার গুলিতে।
মাত্র ২৫ বছর বয়সেই রাধিকা আন্তর্জাতিক টেনিস অঙ্গনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে তিনি একসময় ৭৫তম এবং উইমেন্স ডাবলসে ৫৩তম স্থানে ছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে গুরুগ্রামে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনায় তাঁকে নিজের বাবা দীপক যাদবের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় পুলিশ।
জেরুজালেম পোস্ট-এর এক প্রতিবেদনে সোমবার জানানো হয়, ঘটনার সময় রাধিকা তাঁর বাবার জন্য সকালের নাশতা প্রস্তুত করছিলেন। সেই মুহূর্তে ৪৫ বছর বয়সী দীপক যাদব তাঁর লাইসেন্সকৃত রিভলভার থেকে পাঁচটি গুলি ছোঁড়েন, যার তিনটি রাধিকার শরীরে লাগে। পরে তাঁকে গুরুগ্রামের এশিয়া মারিঙ্গো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, দীপক যাদব এই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের আয়ের ওপর নির্ভর করায় তাঁদের গ্রামের লোকজন থেকে কটু কথা শুনতে হচ্ছিল, যা তিনি সহ্য করতে পারছিলেন না।
এনডিটিভি-র বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দীপক দাবি করেছেন, “কিছু লোক রাধিকার চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল। তাই আমি তাকে বলেছিলাম একাডেমি বন্ধ করে দিতে। কিন্তু সে রাজি হয়নি।”
পেশাদার খেলার জীবন শেষে রাধিকা নিজেই একটি টেনিস একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। সেখান থেকেই তাঁর রোজগার হতো এবং তিনি আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে ওঠেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাঁর বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। সিএনএন নিউজ-১৮-কে পুলিশ কর্মকর্তা বিনোদ কুমার জানান, এটি “অনার কিলিং” নয়।
হত্যার সময় রাধিকার মা মঞ্জু যাদব বাড়িতেই ছিলেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, অসুস্থতার কারণে নিজ কক্ষেই ছিলেন এবং কিছুই দেখতে পাননি।
গুলির শব্দ শুনে রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরে দীপক যাদবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
ভারতে নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ এবং সাফল্য নিয়ে ‘দঙ্গল’, ‘ম্যারি কম’ ও ‘সাবাস মিতু’-র মতো সিনেমা তৈরি হয়েছে, যেখানে পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা জয় করার গল্প উঠে এসেছে। এসব সিনেমায় বাবারা সাধারণত মেয়েদের প্রেরণাদাতা হিসেবে দেখা যায়। কিন্তু রাধিকার গল্প যেন তার বিপরীত—এখানে বাবার হাতেই থেমে গেল মেয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।