ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় পদত্যাগ করেছেন
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:০২ পিএম, ২২ জুলাই ২০২৫
ভারতের ১৪তম উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় পদত্যাগ করেছেন। এখনও প্রায় দুই বছর মেয়াদ বাকি থাকতেই তিনি সোমবার (২১ জুলাই) স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব ছাড়েন। ধনখড় রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে অবিলম্বে পদত্যাগ কার্যকর করার কথা উল্লেখ করেছেন। খবর এনডিটিভি।
পদত্যাগপত্রে ধনখড় লিখেছেন, উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ভারতের অসাধারণ অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেছেন এবং এই সময়টিকে ‘গর্ব ও কৃতজ্ঞতার সময়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
৭৪ বছর বয়সী ধনখড় রাজস্থানের কিথানা গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সৈনিক স্কুল থেকে শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে আইন পেশায় যুক্ত হন। রাজস্থান হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে তিনি পরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। কংগ্রেস থেকে রাজনৈতিক পথচলা শুরু করলেও অশোক গেহলটের উত্থানের সময় তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং চন্দ্রশেখর সরকারের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ধনখড় সেই সময় থেকেই রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন। রাজ্য সরকার এবং বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিকবার দ্বন্দ্বে জড়ান তিনি। আইনশৃঙ্খলা, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়ে বারবার রাজ্য সরকারকে জবাবদিহি করতে বলেন তিনি।
উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে ধনখড় প্রায়শই বিরোধীদের সঙ্গে উত্তপ্ত বিতর্কে জড়িয়েছেন এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা নিয়েও কঠোর মন্তব্য করেছেন। এ কারণে বিরোধীরা একসময় তাকে অপসারণের নোটিশও দেয়, যদিও তা কার্যকর হয়নি। এই উদ্যোগকে ধনখড় ব্যঙ্গ করে বলেন, এটি যেন মরিচা ধরা ছুরি দিয়ে বাইপাস সার্জারি করার চেষ্টা।
২০২২ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ধনখড় বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। তিনি ৭১০টি বৈধ ভোটের মধ্যে ৫২৮টি পেয়ে মার্গারেট আলভাকে পরাজিত করেন, যা ছিল ১৯৯২ সালের পর সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়।
তবে ধনখড়ের পদত্যাগে বিরোধী দল কংগ্রেস সন্দেহ প্রকাশ করেছে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘোষিত স্বাস্থ্যগত কারণ ছাড়াও অন্য কোনো অপ্রকাশিত কারণ থাকতে পারে। এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন তুলেছে।