গাজায় ত্রাণ নিতে এসে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭১

গাজার অবরুদ্ধ উপত্যকায় মানবিক সহায়তা নিতে আসা মানুষের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হামলায় অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা ঘটে বুধবার (৩০ জুলাই)।

কাতারভিত্তিক আল জাজিরা বৃহস্পতিবার হাসপাতালের বরাতে এ তথ্য প্রকাশ করে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা গেছে, উত্তর গাজার জিকিম পয়েন্টে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৫১ জন নিহত এবং ৬৪৮ জনের বেশি আহত হন।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের কাছে মোরাগ করিডর এলাকায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স জানিয়েছে।

চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করে। তবে নিরাপত্তার অভাবে ও কেন্দ্রগুলোর আশপাশে হামলার কারণে এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই কারণে ফাউন্ডেশনটি জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

ত্রাণকর্মী এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গাজার শিশু ও প্রবীণদের মধ্যে খাদ্য সংকট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, অপুষ্টিতে এ পর্যন্ত ১৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৮৯ জন শিশু। বেশিরভাগের মৃত্যু সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে ঘটেছে। মঙ্গলবার এক বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের সংকেত পেয়েছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর মুখপাত্র আদনান আবু হাসনা আল জাজিরা বলেন, “গাজায় ঢুকতে দেওয়া ত্রাণের বেশিরভাগই মানুষের কাছে পৌঁছায় না।”

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার মানুষের খাদ্যের মৌলিক চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রয়োজন। কিন্তু গত চার দিনে মাত্র ২৬৯টি ট্রাক প্রবেশ করেছে।

এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং দ্রুত মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।