চীন-পাকিস্তান সিল্ক রোডে যুক্ত হতে চায় ইরান: পেজেশকিয়ান

চীন ও পাকিস্তানের যৌথভাবে নির্মিত সিল্ক রোড প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তার মতে, এই রোড ইরান হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে, যা আঞ্চলিক বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।

রোববার (৩ আগস্ট) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে জানায়, রাষ্ট্রীয় সফরে পাকিস্তান রওনা হওয়ার আগে তেহরানে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন পেজেশকিয়ান। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের মাধ্যমে আমরা চীন-পাকিস্তান সিল্ক রোডে সংযুক্ত হতে পারি, আর এই রোড ইরানের মাধ্যমে ইউরোপ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।”

তিনি জানান, বর্তমানে ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ইতিবাচক পর্যায়ে রয়েছে এবং এবারের সফরের লক্ষ্য এই সম্পর্ককে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করা।

সীমান্ত বাণিজ্য, পরিবহন এবং বাজার সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন খাতে পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, “দুই দেশের মধ্যে অর্থনীতি, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, শিল্প ও সীমান্ত সহযোগিতাসহ নানা ক্ষেত্রে সম্পর্ক রয়েছে।” এছাড়া তিনি দুই দেশের জনগণের আদর্শিক সংহতির বিষয়টিও তুলে ধরেন।

আঞ্চলিক অস্থিরতা নিয়ে পেজেশকিয়ান বলেন, সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের প্রতিবাদে পাকিস্তানের অবস্থান প্রশংসনীয়। ইরানের ভৌগোলিক অখণ্ডতার পক্ষে পাকিস্তান পার্লামেন্টের অবস্থানের প্রশংসাও করেন তিনি। তার মতে, বাইরের শক্তিগুলো মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, আর সে প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের সঙ্গে ঐক্য গড়তে ইরান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সফর শেষে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান পাকিস্তানে পৌঁছালে লাহোরের আল্লামা ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হয়। শিশুদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো ছাড়াও তাকে স্বাগত জানান পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) প্রধান নওয়াজ শরিফ ও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ। পরে তারা একসঙ্গে একই গাড়িতে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

সফর উপলক্ষে বিমানবন্দরটি পাকিস্তান ও ইরানের পতাকা দিয়ে সাজানো হয়। সফরসঙ্গী হিসেবে পেজেশকিয়ানের সঙ্গে রয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিসহ একাধিক মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

পাকিস্তানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেজেশকিয়ানের এটিই প্রথম সরকারি সফর। সফরকালে তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভার সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় অংশ নেবেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সফর পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান ভ্রাতৃসুলভ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।