দম্পতিদের জন্য আরও কঠোর হলো যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড পাওয়ার নিয়ম
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৬:০৫ পিএম, ০৪ আগস্ট ২০২৫
বিবাহ-ভিত্তিক গ্রিন কার্ড আবেদন এখন থেকে আরও কঠোরভাবে যাচাই করবে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভুয়া সম্পর্কের আশ্রয়ে কেউ যেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ না পায়, সে লক্ষ্যে দম্পতিদের আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করবে ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস)।
১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া এই নতুন নিয়ম যুক্ত হয়েছে ইউএসসিআইএস-এর “ফ্যামিলি বেইজড ইমিগ্রান্টস” নীতিমালায়। এ নিয়ম শুধু নতুন আবেদন নয়, আগের জমা পড়া আবেদনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
এক বিবৃতিতে ইউএসসিআইএস জানায়, “ভুয়া, অপ্রাসঙ্গিক কিংবা ভিত্তিহীন পরিবার-ভিত্তিক অভিবাসন ভিসার আবেদন বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা (এলপিআর) হওয়ার পারিবারিক পথের ওপর আস্থা নষ্ট করে এবং যুক্তরাষ্ট্রে পারিবারিক ঐক্য ক্ষুণ্ন করে।”
তারা আরও জানায়, “আমরা আমেরিকানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে যারা ক্ষতিকর উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন, তাদের চিহ্নিত করে দেশছাড়া করার প্রক্রিয়া শুরু করাই আমাদের লক্ষ্য।”
কী থাকছে নতুন নিয়মে?
- পারিবারিক অভিবাসনের আবেদন প্রক্রিয়ায় যেসব পরিবর্তন এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম:
- আবেদনকারী দম্পতিদের সম্পর্ক বাস্তব কি না, তা নিশ্চিত করতে যাচাইয়ের প্রক্রিয়া আরও উন্নত করা হয়েছে।
- একসঙ্গে তোলা ছবি, যৌথ আর্থিক নথিপত্র এবং বন্ধু ও আত্মীয়দের ঘোষণাপত্র আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
- আবেদনকারী দম্পতিদের সশরীরে উপস্থিত থেকে সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে হবে, যাতে সম্পর্কের স্বচ্ছতা যাচাই করা যায়।
- একই স্পন্সরের একাধিক আবেদন অথবা একাধিক আবেদনকারীর পক্ষে করা আবেদনের ক্ষেত্রে অতীত রেকর্ড খতিয়ে দেখা হবে। যেমন: এইচ-১বি ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ব্যক্তিদের অভিবাসন ইতিহাস বিশেষভাবে পর্যালোচনা করা হবে।
- আবেদন মঞ্জুর হলেও, যদি দেখা যায় আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের উপযুক্ত নন বা বহিষ্কারের যোগ্য, তাহলে তার বিরুদ্ধে দেশে ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইউএসসিআইএস স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, শুধুমাত্র গ্রিন কার্ড আবেদন মঞ্জুর হলেই যে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে থেকে যাবেন, তা নয়।
সংস্থাটি বলছে, এই হালনাগাদ নির্দেশনা প্রকৃত বৈবাহিক সম্পর্ক যাচাইয়ের প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে এবং প্রচলিত সব অভিবাসন আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
বিশেষ করে, বাংলাদেশসহ যেকোনো দেশের নাগরিক যদি কোনো মার্কিন নাগরিককে জীবনসঙ্গী হিসেবে স্পন্সর করে থাকেন, তাহলে তাদেরকে যৌথ ব্যাংক হিসাব, ছবি এবং নিকটজনদের লিখিত বিবৃতি দিয়ে সম্পর্কের বাস্তবতা প্রমাণ করতে হবে। একই সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তাদের পারস্পরিক পরিচয় ও সম্পর্কের গভীরতা যাচাই করা হবে।
কেন আসছে এই কড়াকড়ি?
এই নিয়ম কঠোর হওয়ার পেছনে রয়েছে সাম্প্রতিক কিছু ভুয়া বিবাহ সংক্রান্ত প্রতারণার ঘটনা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভারতীয় নাগরিক আকাশ প্রকাশ মাকওয়ানার ঘটনা। সম্প্রতি তিনি স্বীকার করেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকার জন্য তিনি একটি ভুয়া বিয়ের আশ্রয় নিয়েছিলেন।
জে-১ ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে তিনি একটি ভুয়া বৈবাহিক সম্পর্কের কাগজপত্র জমা দেন এবং পারিবারিক নির্যাতনের ভুয়া অভিযোগ তুলে গ্রিন কার্ড পাওয়ার চেষ্টা করেন।
সূত্র: এনডিটিভি