চীন সফরে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি


চীন সফরে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি

সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে চলতি আগস্টের শেষ দিনে চীনে পা রাখতে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দিনের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে চীনের তিয়ানজিন শহরে, চলবে ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর দুই দেশের সম্পর্ক একপ্রকার জমে গিয়েছিল। মোদির এই সফর সেই টানাপড়েন কাটিয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অগ্রগতি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

প্রসঙ্গত, নরেন্দ্র মোদি সর্বশেষ চীন সফর করেন ২০১৯ সালে। তবে ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজান শহরে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন তিনি।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক টানাপোড়েন বেড়েছে। বিশেষ করে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ এবং অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকির প্রেক্ষাপটে চীন সফরকে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এমন সময় চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি, যখন কাশ্মিরের পেহেলগাম হামলা নিয়ে ইসলামাবাদের প্রতি চীনের প্রকাশ্য সমর্থনও সামনে এসেছে। তা সত্ত্বেও এসসিও সম্মেলনে ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণ আঞ্চলিক রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা হিসেবে ধরা হচ্ছে।

তবে সম্প্রতি এসসিও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে ভারত কিছু মতানৈক্যের কারণে যৌথ বিবৃতি থেকে নিজেদের বিরত রেখেছিল। ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেননি। কারণ, এতে পেহেলগামে ২২ এপ্রিল সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬ জনের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। বরং বালুচিস্তান ইস্যু টেনে ভারতের প্রতি অস্থিরতা সৃষ্টির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তোলে দিল্লি।

পরে জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র পেহেলগাম হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সহযোগী সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’কে বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। যুক্তরাষ্ট্রের ওই পদক্ষেপের পর চীনও প্রকাশ্যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানায়।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান সেসময় বলেন,
চীন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে এবং ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা জোরদারে আমরা এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই।

চলতি এসসিও সম্মেলনে ১০ সদস্য রাষ্ট্রের অংশগ্রহণে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মোদি ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে একটি সম্ভাব্য বৈঠক ভারত-চীন সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। একইসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও মোদির বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এসসিওর প্রধান লক্ষ্য আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। বর্তমানে সংস্থাটির সদস্য ১০টি দেশ, যেগুলো হলো: ভারত, চীন, পাকিস্তান, রাশিয়া, ইরান, বেলারুশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান।

সূত্র: এনডিটিভি, রয়টার্স।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×