নিজ দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান ইসরায়েলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৮:০৭ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২৫
ইসরায়েলের বর্বর হামলার নিন্দা জানিয়ে দেশটিরই একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেনাচেম ক্লেইন এই হামলাকে ‘অপরাধমূলক আক্রমণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্লেইন বলেন, “এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটি একটি নীতি। ইসরায়েল বারবার এই ধরণের অপরাধমূলক আক্রমণ বাস্তবায়ন করেছে। এটি প্রথমবার নয়। দুর্ভাগ্যবশত যদি যুদ্ধবিরতি না হয়, আমি ধরে নিচ্ছি, এই হামলাই শেষ নয়।”
তার মতে, বেসামরিক লোকজন নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামাস সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলার দাবি করে থাকে, যা তাকে বিস্মিত করবে না। তবে ক্লেইন পরিষ্কারভাবে বলেন, “যেভাবেই দেখি না কেন, এটি একটি অপরাধমূলক কাজ।”
তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার ভেতরে বসবাসকারী সকলের পরিস্থিতি অমানবিক করে তুলেছে। এটাই সমস্যা। এটি নৈতিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করা।”
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৫ আগস্ট) ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলের নাসের হাসপাতাল লক্ষ্য করে ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৪ জন সাংবাদিক রয়েছেন। হামলা চালানো হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওপরতলা লক্ষ্য করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দুটি পৃথক বিমান হামলার একটি সরাসরি হাসপাতালের চতুর্থ তলায় আঘাত করে। এরপর উদ্ধারকর্মীরা আহতদের সরিয়ে নেওয়ার সময় দ্বিতীয় হামলা চালানো হয়।
সরকারি ফিলিস্তিন টিভির তথ্য অনুযায়ী, নিহত সাংবাদিকদের একজন ছিলেন তাদের নিজস্ব ক্যামেরাম্যান হুসাম আল-মাসরি। আল জাজিরা নিশ্চিত করেছে, তাদের আলোকচিত্রী মোহাম্মদ সালামা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রাণ হারিয়েছেন ফটোসাংবাদিক মরিয়ম আবু দাক্কা এবং মোয়াজ আবু তাহা।
আল-মাসরি রয়টার্সের জন্য কাজ করছিলেন। বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, হামলার সময় তিনি হাসপাতালে থেকে লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করছিলেন, যা মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যায়। পরে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ফিলিস্তিনের সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ২৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।